ধোপাজানের বালু হরিলুট, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
- আপলোড সময় : ০২-০৯-২০২৪ ০২:১৭:৩৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-০৯-২০২৪ ০২:১৭:৩৪ অপরাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ ::
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সুনামগঞ্জের অন্যতম বালুমহাল ধোপাজান-চলতি নদীতে সক্রিয় হয়েছে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র। তাদের ছত্রছায়ায় অবাধে চলছে বালু লুট। ইজারাবিহীন এই বালুমহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চললেও এটি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। গোয়েন্দা বিভাগ কিংবা পুলিশের অভিযানে মাঝেমধ্যে নৌশ্রমিকদের কতিপয় সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হলেও বালুখেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সরেজমিনে ধোপাজান-চলতি নদীতে ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্থবিরতা দেখা দেয়। এই সুযোগে ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদী বালুমহালে বেপরোয়া হয়ে উঠে একাধিক সিন্ডিকেট। দিনে-রাতে ড্রেজারের সাহায্যে তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। পরে উত্তোলিত বালু বাল্কহেড নৌকায় করে গজারিয়া নদীসহ একাধিক পথ দিয়ে সুরমা নদীতে থাকা বড় বড় কার্গোতে লোড করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া, ধোপাজান-চলতিসহ সুরমা নদীর একাধিক স্থানে নৌশ্রমিকদের কাছ থেকে নামে-বেনামে চাঁদা আদায়ে সক্রিয় রয়েছে আরেকটি চক্র। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তারা শ্রমিকদের মারধর করে ও লুটপাট চালায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নৌশ্রমিক জানান, বালুর এই ব্যবসার সাথে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাসহ সুনামগঞ্জ পৌর শহরের প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে। কেউ সরাসরি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। আবার কেউ বালু বেচাকেনা ও চাঁদা উত্তোলনের সাথে স¤পৃক্ত রয়েছে।
নৌশ্রমিকরা আরও জানান, ধোপাজান থেকে বালুভর্তি বাল্কহেড সদর উপজেলার লালপুরের গজারিয়া নদী দিয়ে খরচার হাওর হয়ে দুর্লভপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সুরমা নদীর বিভিন্ন স্থানে বড় বড় কার্গোতে বালু লোড করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করা হচ্ছে।
এদিকে সচেতন ব্যক্তিবর্গ জানান, ইজারাবিহীন বালুমহালে এমন হরিলুট বন্ধ না হলে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাবে, অন্যদিকে নদীতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। এতে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানাযায়, ধোপাজান-চলতি নদী মহালে বালু লুট বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত রবিবার এক অভিযানে তিনটি বাল্কহেডসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবির ওসি মো. আমিনুল ইসলাম। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার এমএন মোর্শেদ জানান, বালুমহালে প্রতিদিন আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। নৌকা আটক করা হচ্ছে। মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ